আশরাফুল ইসলাম মিলন (৩৫) ১৮ পারা কোরআনে হফেজ। কিন্তু নিজেকে মিলন চক্রবর্তী পরিচয় দিয়ে চার বছর আগে বিয়ে করেছেন এক হিন্দু মেয়েকে।
বিয়ের পর থেকে সদর উপজেলা চেঙ্গারডাঙ্গা গ্রামে শ্বশুর বাড়ীতে অবস্থান করছেন। গলায় ব্রাহ্মণের পৈতা পরে পুরোহিত সেজে মিলন ঠাকুর দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে পূজা-অর্চণা করে আসছেন । এ পর্যন্ত এক ডজনের উপরে হিন্দু বিয়েও পড়িয়েছেন তিনি। অবশেষে প্রতারণার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে ডিবি পুলিশ হাতে আটকের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এ রকম চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
আটক মিলনের কাছ থেকে মোবাইলের একাধিক সিম ও সেট পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ইসলাম ও সনাতন ধর্মের দু’ধরনের পরিচয়ের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে। মাগুরা ডিবি পুলিশের এস আই সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, আটক মিলন চেঙ্গারডঙ্গী গ্রামের চয়ন বিশ্বাস নামের এক যুবককে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৬ লক্ষ টাকা নেয়। পরে চাকরি না পেয়ে চয়ন বিশ্বাস ডিবি পুলিশের কাছে অভিযোগ করে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে মিলনকে শশুর বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের এক মামলায় প্রতারক মিলনকে আদালতে নেওয়া হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এসআই মো. সালাহউদ্দিন বলেন, আপাতত তার বিরুদ্ধে একটা মামলা দেওয়া হয়েছে। গভীর তদন্তের জন্য রবিবার তাকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে।
জিজ্ঞাসবাদে পাওয়া তথ্য অনুয়ায়ী এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ১৮ পারা কোরঅানে হাফেজ আশরাফুল ইসলাম মিলন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঞ্চন নগর গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের পুত্র। সেখানে তার পূর্বের স্ত্রী ও একটি সন্তান রয়েছে। ভারতে যাতাযাতের সূত্র ধরেই মাগুরা সদরের চেঙ্গারডাঙ্গা গ্রামের বিকাশ বিশ্বাসের সাথে তার পরিচয় ও তাদের বাড়িতে যাতায়াত। পরে ২০১৩ সালে হিন্দু ব্রাক্ষ্মণ পারিচয়ে তার মেয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মিতা বিশ্বাসকে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করে সে এলাকায় পুরোহিতের পেশা বেছে নিয়েছে।
আটক মিলনের পাসপোর্ট উদ্ধার করে দেখা গেছে গত দুই/তিন বছরে সে ৫০ বার ভারতে গেছে। তাছাড়া ভারত ও বাংলাদেশে তার নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সে বড় কোন অপরাধী চক্রের সদস্য কিনা, কোন অপরাধ করে আত্মগোপনে রয়েছে বা কোন অপরাধ সংগঠনের জন্য এখানে অবস্থান কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান এস আই সালাহউদ্দিন।
পাঠকের মতামত: